মহামারি করোনার ছোবলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নানা ধরণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। তবে আশার কথা হল, আগামী অর্থবছর নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

একইসঙ্গে ২০২১ সালের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী নতুন সফটওয়্যারও তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, আসন্ন ২০২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সুযোগ রেখে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয় সেই বরাদ্দ সিলিং করে দিয়েছিল আগেই। এখন সেই বরাদ্দের পুরোটা না পাওয়া গেলেও কিছুটা এমপিওভুক্তির খাতে মিলেছে।

তবে কি পরিমান যোগ্যতাসম্পন্ন স্কুল-কলেজ পাওয়া যায় এর ওপরই এটা নির্ভর করছে। এদিকে আগামী অর্থবছরে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভুক্তির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিলো মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ।

পুরোটা না পেলেও ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তাদের। এদিকে দাবি জানালেও আগামী অর্থবছরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির জন্য কোনো বরাদ্দ পায়নি। এ বিষয়ে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন এমপিওভুক্তির জন্য আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে। নতুন সফটওয়্যার তৈরির কাজও শেষের দিকে।

এটা শেষ হলেই আবেদন নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। প্রসঙ্গত, এমপিওভুক্তির জন্য ২০১৮ সালে ৯ হাজার ৪৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাই শেষে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাগজপত্রের হার্ডকপি বাছাই করে দুই হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্তভাবে এমপিওভুক্ত করা হয়েছিলো। আবার বিশেষ ক্ষমতাবলে ২০১৯ সালের শেষের দিকে আরো সাতটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিলো সরকার।

তবে এবার এমপিওভুক্তির বেশ কিছু শর্তে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া দুই বছর আগেই যেহেতু মাত্র দুই হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান যোগ্য হয়েছে। ফলে আগামী অর্থবছরেও সব ধরনের প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে সর্বোচ্চ হাজারখানেক প্রতিষ্ঠানের শর্ত পূরণের সুযোগ রয়েছে।

২০২১ সালের নীতিমালা অনুযায়ী, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি পেতে নিম্ন মাধ্যমিকে শহরে ১২০ ও মফস্বলে ৯০, মাধ্যমিকে শহরে ২০০ ও মফস্বলে ১৫০, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহরে ৪২০ ও মফস্বলে ৩২০, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে শহরে ২৫০ ও মফস্বলে ২২০ এবং ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে শহরে ৪৯০ ও মফস্বলে ৪২৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। পাসের হার স্তরভেদে সর্বনিম্ন ৪৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।

এছাড়া নতুন এমপিও পেতে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যায় ৩০, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ ও পাসের হারে ৪০ নম্বর রাখা হয়েছে।